মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর আরোপ করা শুল্ক অন্তত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন। ট্রাম্প জানিয়েছে, এরই মধ্যে বিশ্বের ৭৫টির বেশি দেশ শুল্কের বিষয়ে আলোচনায় বসতে চেয়েছে। সে জন্যই এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। মূলত বৈশ্বিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র যে অভিযোগ এনেছে তা সমাধান করতে রাজি ভুক্তভোগী দেশগুলো। ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের পরই ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে বাজার ব্যবস্থা। এরই মধ্যে দেশে দেশে শেয়ারবাজারগুলোতে সূচক বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। দূর হচ্ছে অর্থনৈতিক ক্ষতির আশঙ্কা।
গত ২ এপ্রিল ডোনাল্ড ট্রাম্প সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেন। এরপরই বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন দেখা যায়। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বড় বড় অর্থনীতির দেশগুলোর শেয়ারবাজারে ধস নামে। বাড়ানো হয় অর্থনৈতিক মন্দার পূর্বাভাস। অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যায় ব্যবসা। তবে হঠাৎ করেই শুল্ক স্থগিত করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রমাণ করলেন তার বাণিজ্য নীতির ফলাফল সম্পর্কে তিনি অবগত। তবে শুল্ক স্থগিত করলেও এখনো কয়েকটি উদ্বেগের বিষয়ে থেকে গেছে। এই শুল্ক নীতির সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে চীনকে বাদ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ চীনের পণ্যের ওপর শুল্ক স্থগিত তো দূরের কথা আরও বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করা হয়েছে। এর আগে চীনা পণ্যের ওপর মার্কিন প্রশাসন ১০৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে ৮৪ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে চীন। বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির এই পাল্টা-পাল্টি পদক্ষেপে বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র হয়েছে। চীনা পণ্যে নতুন করে শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, বিশ্ব বাজারের প্রতি চীন যে অসম্মান দেখিয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে আমি তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করার ঘোষণা দিচ্ছি। এটি এখন থেকেই কার্যকর হবে। অদূর ভবিষ্যতে চীন হয়তো এটা বুঝতে সক্ষম হবে যে, তাদের অন্য দেশগুলো ও আমেরিকার ক্ষতি করার দিন শেষ হয়ে এসেছে। তবে ট্রাম্প আরও বাণিজ্যের ব্যাপারে আগ্রহী এবং প্রশাসনও আলোচনার জন্য প্রস্তুত বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট।
এদিকে ট্রাম্প শুধু অতিরিক্ত শুল্কারোপের বিষয়টি স্থগিত রেখেছেন। যে সব দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি বেশি তাদের ওপর এই অতিরিক্ত শুল্ক বসানো হয়েছিল। তবে সর্বজনীন যে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল তা বহাল থাকবে। তাছাড়া গত মাসে গাড়ি ও এর যন্ত্রাংশের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়। পাশাপাশি ফার্মাসিউটিক্যালস ও সেমিকন্ডাক্টরের ওপরও নতুন মার্কিন শুল্ক আসতে যাচ্ছে। এখন ৯০ দিনের জন্য অতিরিক্ত শুল্ক স্থগিত করে বিশ্ব বাণিজ্যকে স্বস্তি পথে আনলেও ট্রাম্প মার্কিন গড় শুল্কের হার প্রায় এক শতকের মধ্যে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ করেছেন। সবশেষ উদ্বেগটি হলো ট্রাম্প তার এই শুল্ক ব্যবস্থা একেবারে বন্ধ করে দেননি, শুধু স্থগিত করেছেন। তিনি আবারও যে কোনো সময় শুল্কের হুমকি সামনে নিয়ে আসতে পারেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন
ট্রাম্পের শুল্ক স্থগিত বিনিয়োগকারীদের জন্য স্বস্তির
- আপলোড সময় : ১১-০৪-২০২৫ ০৭:১৩:০৫ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ১১-০৪-২০২৫ ০৭:১৩:০৫ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ